গাছা থানায় আসামীর ‘স্টোকের’ ভান চতুরতা বুঝতে না পেরে বিপাকে ওসি
ঢাকা বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান ঃ
গাজীপুর মহানগরের গাছা থানায় কুনিয়াবাড়ি এলাকায় গত বছর ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই মিনহাজকে গুলি করে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি আসাদুজ্জামান বাবু ওরফে লম্বা বাবুকে গ্রেফতার করেছে গাছা থানা পুলিশ গ্রেপ্তারের পর থানায় নিয়ে আসা হলে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ এর সময় হঠাৎ করে পড়ে যায় এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে স্ট্রোক ভেবে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে দ্রুত স্থানীয় তায়রুনেচ্ছা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার স্বজনদের জিম্মায় পাঠানো হয়। এরপরই এলাকায় চাপা ক্ষোভ ও বিতর্কে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আলী মোহাম্মদ রাশেদকে ঐদিন রাতেই তাকে ফের গ্রেফতার করার পরও থামছে না বিতর্ক
এ বিষয়ে গাছা থানার এসআই সুমন খান জানান, আমি বাবুকে গ্রেফতার করে থানা নিয়ে আসি; পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার স্বজনদের ডেকে আনি সাথে তারই এলাকার রেহান ও রাজুর জিম্মায় ওসি স্যারের আদেশে তাকে দ্রুত মেডিকেলে নেয়ার জন্য ছেড়ে দেই
লম্বা বাবু যে অসুস্থতার ভান ধরে আমাদের সাথে এত বড় চালাকি করবে এটা বুঝতে পারিনি।
‘এদিকে স্টোক’ এর ভান ধরে থানা থেকে ছাড়া পেয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা পরে হাসপাতালে ‘চিকিৎসা’ নিয়ে তিনি সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরেন। থানায় অসুস্থতা বা ‘স্টোক’ করার ভান করেছিলেন এমন খবর পেয়ে পুলিশ তাকে ফের গ্রেফতার করেন।
সূত্র মতে গাছার কুনিয়াবাড়ি এলাকায় গত বছর ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই মিনহাজকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই মামলার অন্যতম আসামি লম্বা বাবু। এ বিষয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর মিনহাজের চাচা কুদ্দুস বাদী হয়ে গাছা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় গাছা থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবু ওরফে লম্বা বাবুকে স্থানীয় কলমেশ্বর এলাকা থেকে আটক করে গাছা থানা পুলিশ। থানায় নেয়ার পর তিনি ‘স্টোক’ করেন। পরে স্বজনদের ডেকে নিয়ে তাকে দ্রুত স্থানীয় তায়রুনেচ্ছা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার পর তার স্টোক হয়নি বলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাসায় চলে যান। থানা থেকে ছাড়া পেতে তিনি স্টোক করার অভিনয় করেছিলেন এমন খবরে পুলিশ ওই দিন রাতেই তাকে ফের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকান্ডের মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার ওসি আলী মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, থানায় মারা গেলে পুলিশের দুর্নাম হবে। এই ভয়ে তাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য ছেড়ে দিই। তাছাড়া তিনি মামলার এজাহার নামীয় আসামী ছিলেন এটি আমাদের আগে জানা ছিল না। তিনি থানায় স্টোক করার ভান ধরেছিলেন এবং হাসপাতাল থেকে সরাসরি বাসায় চলে গেছেন জানতে পেরে ওই দিন রাতেই তাকে ফের গ্রেফতার করা হয়। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মিনহাজ হত্যা মামলার আসামী। তাকে ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।