ভাগ্যের নির্মমতায় আশ্রয়হীন মমতাময়ী মা সুফিয়া
মোঃফাহিম হোসাইন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ
মা দিবসে মায়ের ভালোবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে দেখা মেলে এমন এক মমতাময়ী মাকে যিনি জীবনের সাথে সংগ্রাম করে এখনো বেঁচে আছেন,পার করতেছেন প্রতিটা দিন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভূল্লী থানা আওতাধীন ১৮ নং শুখান পুখরী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে দেখা মিলে এই মমতাময়ী মায়ের।
চোখের কোণে পানি আটকে রেখে তিনি তার হৃদয়ের কথা শোনান।তিনি বলেন শুরুর জীবনটা অনেক সুন্দর ছিলো তাদের,স্বামী আজিদ সহ তাদের দুই মেয়েকে নিয়ে ভালোই যাচ্ছিলো তাদের জীবন।কিন্তু এই ভালো থাকাটা বেশি দিন থাকতে পারি নাই হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে চলে যান স্বামী আজিদ।স্বামীর মৃত্যুর পর চারপাশে যেনো শূন্যতা অনুভব করতে থাকি।কি করবো কিভাবে মানুষ করবো দুই মেয়েকে।কিন্তু একটাই ভাবনা ছিলো মাথায় মেয়েদের মানুষ করতেই হবে,মেয়েদের কথা ভেবে কখনো আর বিয়ের কথা চিন্তাও করেন নাই এই মমতাময়ী মা ।তিনি বলেন অনেক কষ্ট করে অন্যের বাড়িতে কাজ করে খেয়ে না খেয়ে বড় করি মেয়েদের। অন্যের বাড়িতে কাজ করে যে টাকা পেতাম সেখান থেকে কিছু টাকা জমিয়ে বিয়ে দেই দুই মেয়েকে। মেয়েদের বিয়ের পর আরো যেনো একা হয়ে যায় এই মমতাময়ী মা।তিনি বলেন টাকা পয়সা তেমন না থাকায় কিনতে পারি নাই বসত ভিটা তাই অন্যের জমিতে একটা ঘর তুলে কোন মতো দিন পার করছি।বয়স বেড়েছে শরীরের চামড়ায় ঝুল ধরেছে তাই এখন আর তেমন কোন কাজ করতেও পারি না। অন্যের কাছে হাত পেতে কিছু টাকা নেই,আর বিধবাভাতার যে টাকা পাই সেটা দিয়েই চলতেছে আমার জীবন।তিনি চোখের কোনে পানি নিয়ে বলেন অনেক দিন না খেয়েও থেকেছি।কি করবো কাকে বলবো বয়স বাড়ার কারনে কোন কাজেও নেয় না কেউ।বয়স ৭০ বছর হওয়ার কারনে শরীরে দেখা মিলেছে নানা রোগের কিন্তু টাকার অভাবে কিনতে পারি না ঔষধ। এসব কথা বলা অবস্থায় লক্ষ্য করলাম তিনার দুচোখ বেয়ে পানি পড়ছে।মেয়েদের কথা জানতে চাইলে বলেন, মেয়ে মানুষ অন্যের ঘরে দিছি তাদেরকেই বা কি বলবো,আমার জীবন তো শেষের দিকে দোয়া করি মেয়ে দুইটা যেনো ভালো থাকে।বাস্তবতা কতোটা নির্মম নিজের এতো কষ্টের পরেও তিনি সন্তানদের কথা ভাবেন।মা হয়তো এমনি হয়।
আপনাদের একটু সহযোগীতায় হয়তো ভালো থাকবেন এই মা।তিনার এমন জীবন দশায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বলেন মমতাময়ী মা সুফিয়া বেগম।